বদির চলে যাওয়ার সংবাদে বুকের ভেতর থেকে কি একটা দলা পাকিয়ে উপরে উঠে আসছে বারবার। পত্রিকায় পড়েছিলাম, উনি শুধু ছয়টা মাস বাঁচতে চেয়েছিলেন। কেবল ছয়টা মাস। তিনি সবার সাথে শেষ দেখাটি করতে চেয়েছিলেন...

এটি সেই দৃশ্য। বাকের ভাইকে নিয়ে মিথ্যে সাক্ষী দিয়ে ফেরার সময়। হুমায়ূন ফরীদির ডায়লগ ছিলো এমন, 'ইচ্ছে করলে এই মামলা আমি ধুলোয় উড়িয়ে দিতে পারতাম বদি। শুধু তোমার কারনে পারিনি'

সে সময় বদি ছিলো আমার চোখে একজন বিশ্বাসঘাতক। অনেক সময় লেগেছিলো বদিকে পরবর্তী কোনো চরিত্রে গ্রহন করতে। বোধকরি সে সময়ে বদি'র প্রতি এই ছিলো পুরো জাতির মনোভাব।

'কোথাও কেউ নেই' নামের এই কালজয়ী নাটকে বদি'র বিখ্যাত সংলাপ ছিলো, 'মাইরের মধ্যে ভাইটামিন আছে'

'কোথাও কেউ নেই', নাটকটির বিভিন্ন দৃশ্যের পোস্টার বের হয়েছিলো সে সময়। এখনও মনে পড়ে আমিও কিনেছিলাম মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের একটি দোকান থেকে। যে পোস্টারে দেখা যায়- বদি, বাকের ভাই আর মজনু বসে আছে চায়ের দোকানে। পোস্টারের নীচে লেখা ছিলো 'মাইরের মধ্যে ভাইটামিন আছে'।

কোথাও কেউ নেই নাটকের তারা তিনজন

বদি'র নামের আগে আজকে প্রয়াত বসাতে হচ্ছে। তিনি চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে আজ। এই দৃশ্যের হুমায়ুন ফরীদি, কিংবদন্তী অভিনেতা তো চলে গেছেন আরো আগেই। 

এইতো কিছুদিন আগেই চলে গেলেন আলী যাকের। অভিনয় জগতের আরেক মহীরুহ কিংবা বাতিঘর, যাই বলিনা কেন।

আমাদের শৈশব, কৈশোর, আমাদের তারুন্যের সব আলো একে একে আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমরা বিষন্ন মুখে শুধু দেখে যাচ্ছি।

বদি'র চলে যাওয়ার সংবাদে বুকের ভেতর থেকে কি একটা দলা পাকিয়ে উপরে উঠে আসছে বার বার। প্রথম আলো পত্রিকায় পড়েছিলাম, উনি শুধু ৬ টা মাস বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন। কেবল ৬ টা মাস। তিনি সবার সাথে শেষ দেখাটি করতে চেয়েছিলেন। হলো না আর... 

হারাবার যন্ত্রণার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই আসলে...


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা