অ্যালেন শুভ্র: যিনি 'হতে পারতেন' নতুন প্রজন্মের সেরা অভিনেতা
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
ক্যারিয়ারের শুরুর সময়টাতেই এত প্রশংসা, এত অর্জনের পরেও অ্যালেন শুভ্র এখনও সঠিক জায়গাটায় পৌঁছাতে পারেননি। ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি উদাসীন, বারবার শিরোনাম হয়েছেন বিতর্কিত খবরে।
'অ্যালেন শুভ্র নতুন প্রজন্মের সেরা অভিনেতা'- এই কথা শুধু দর্শকেরা বলেন তাই নয়, তার সহশিল্পীরাও নির্দ্ধিধায় স্বীকার করে নেন। কিন্তু তিনি নিজে তার অভিনয় প্রতিভার কতটুকু যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে!
বলছিলাম অ্যালেন শুভ্রর কথা। চেহারা নায়কোচিত নয়, কেউ কেউ বলেন শিশুসুলভ টাও প্রকট, তরুনীদের ক্রাশ হবার মতো হয়তো নয়। তার প্রধান সম্পদ হচ্ছে অভিনয়। অনেক অভিনেতাই আজও একটা ভালো কাজের জন্য চাতক পাখির মত চেয়ে থাকেন। এদিকে অ্যালেন শুভ্রকে অভিনয়ের জন্য নির্মাতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়নি, এমন ও নয় যে তার ভালো কাজ দর্শকেরা উপেক্ষা করেছে, বরং সমাদৃত বা জনপ্রিয় কাজের সংখ্যা বেশ চোখে পড়ার মত।
অনেক বছর কাজ করেও অনেক অভিনেতার সঙ্গেই যেসব ভালো নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করা এখনো অধরা রয়ে গেছে, সেসব গুণী নির্মাতারাই শুভ্রকে খুঁজে খুঁজে নিয়েছেন অভিনয়ের জন্য। আদনান আল রাজীব, অনিমেষ আইচ, রেদওয়ান রনি, ওয়াহিদ আনাম, অমিতাভ রেজা, শাফায়েত মনসুর রানা, তানিম রহমান অংশু থেকে মাহফুজ আহমেদ, নুহাশ হুমায়ূনরা তাকে নিয়ে কাজ করেছেন। ভাবা যায়!
@18 অলটাইম দৌড়ের উপর, হলুদ, ইচ্ছে হলো, ইউটার্ন, ইউনিভার্সিটি, ইম্পসিবল ফাইভ, দ্য লাস্ট অর্ডার, মেঘলা, হোটেল আলব্রাটস, মায়া, উপসংহার, এক্সট্রা আর্টিস্ট, বিকেল বেলার পাখি- সবগুলো কাজই দর্শক থেকে সমালোচক সবাই পছন্দ করেছে, তার অভিনয়ের প্রশংসাও হয়েছে অনেক। ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে পছন্দের 'কেবলই রাত হয়ে যায়'; কি প্রানবন্ত অভিনয়।
গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে এগুলো প্রথমদিকেই থাকবে, এটা একজন নবীন অভিনেতার জন্য বড় অর্জনই বলা যায়। সিনিয়র দক্ষ অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেও ম্লান হতে হয় নি,তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। সমসাময়িক বন্ধুদের সঙ্গে তো আলো কেড়ে নিতেন। ইতি তোমারই ঢাকা, ভয়ংকর সুন্দর সিনেমা করেছেন, সামনে আসবে রিক্সা গার্ল সিনেমাটি।
কিন্তু এত বাহবা, এত অর্জনের পরেও অ্যালেন শুভ্র সঠিক অবস্থানে পৌঁছতে পারেননি। না, এটা ইন্ডাস্ট্রির দোষ নয়, নির্মাতা বা দর্শকেরা তাকে দারুণ ভাবে গ্রহণ করলেও তিনি হেঁটেছেন ভিন্ন পথে। বন্ধুমহলের অভিনেতারা যেখানে নিজেদের প্রমাণ করতে ব্যস্ত, সেখানে নিজেকে প্রমানিত হবার অতি আত্ববিশ্বাসে ক্যারিয়ার নিয়ে উদাসীন, শিরোনাম হয়েছে শুটিংকালীন অন্য খবরে। তাকে নিয়ে গুগলে সার্চ দিলে সেসব বিতর্কিত খবরগুলোই আগে চলে আসে৷ যেটা শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দুঃখজনক, তাই আজ চূড়া থেকে তিনি মাটিতে নামার পথে।
অভিনয়টা এখনো কম-বেশি করেন, তবে সেগুলো নিম্নমানের নির্মাতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক কালে আমার অপরাধ কি?, শূন্য পাতার চিঠি, মিডলক্লাস দিনরাত্রি সহ কিছুটা আলোচনায় এলেও অ্যালেন শুভ্রের কাছে সবার প্রত্যাশা আরো বেশি, সবাই চায় তিঞ্জ আরো ভালো ভালো কাজে যুক্ত থাকবেন। এখন ওয়েব প্লাটফর্মের যুগে আরো বেশি নিজেকে প্রমাণ করে যাবেন।
তবে সেরকম কোন খবর দিয়ে এখনো আশা জাগাননি। যদিও তিনি ভাগ্যবান যে এখনো সবাই তাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখান৷ কিন্তু কারো জন্য সময় থেমে থাকে না, নবীনরা এসে জায়গা করে নেয়। যারা অভিনয়টাকে মন থেকে ভালোবাসেন, চেষ্টা করেন তারাই আলোর প্রদীপ জ্বালাবেন। সেটাই হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক।
তাই অ্যালেন শুভ্রকে নতুন প্রজন্মের সেরা অভিনেতা না বলে নতুন প্রজন্মের সেরা অভিনেতা হতে পারতেন বললে বেশি যুক্তিযুক্ত হয়। সে যাই হোক,ভালোবাসা আবেগ তো যুক্তি মানে না, শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার সুদিনের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে। গতকাল তার জন্মদিন গেল, জন্মদিনে এটাই চাওয়া, আবারও উজ্জ্বল শুভ্র হোক সুন্দরতম ক্যারিয়ার। শুভ জন্মদিন, অ্যালেন শুভ্র!