মূল গল্পে কোন টুইস্ট নেই, ক্যারেক্টার বিল্ড আপ নেই, অন্তরঙ্গ দৃশ্য বলে যা দেখানো হয়েছে তা হাস্যকর ছিল, কাহিনীর বিন্যাস আগ্রহ জাগায় না বা গল্পে তেমন কিছুই নেই যা দর্শক আসলে জানে না। তাই বারবার প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন দেখছি! 

বিঞ্জের নতুন সিরিজ 'নয় এপ্রিল' দেখে হতাশ হলাম। নির্মাতা কৌশিক শঙ্কর দাস, ছোটপর্দায় কাজ করছেন দীর্ঘদিন। ভেবেছিলাম সত্য ঘটনার আলোকে হয়তো ওয়েবে থ্রিলার ফ্লেভারে পুরোটা সিরিজ উপভোগ্য হবে। কিন্তু যেই লাউ সেই কদু। আমরা এখনো ওয়েবের ভাষা বুঝতে, স্ক্রিনপ্লে এঙ্গেজিং রাখতে অক্ষম।

ধনী পরিবারের ছেলে মাহের তার নববধূকে হত্যা করে কারওয়ান বাজারে একটি হোটেলে আসে। মায়ের জন্য এত আন্তরিক ছেলে কেন বাসায় না গিয়ে হোটেল থেকে মা'কে কল করলো, জানি না। বাসায় ছেলেকে এনে মা যথারীতি ঘটনা মিথ্যা আবহ দিয়ে আড়াল করতে চাইলেন পুলিশের কাছ থেকে যেখানে আবার ছেলে পাপবোধে বিদ্ধ। বর্তমান সময়ের সাথে আবার ফ্ল্যাশে মাহেরের যা-তা লাইফ, স্ত্রী হিসাবে রিনিকে তার মায়ের পছন্দ করা আর মাহেরের নতুন প্রেমের বিষয়গুলো আসতে থাকে আর গল্প টানতে থাকে কোনরকমে ছয় পর্ব। এটা খুব জোর তিন পর্বের মিনিসিরিজ বা এক ঘণ্টার ওয়েবফিল্ম হলে সময়টা বাঁচতো।

গল্পে আরেকটু চমক থাকতে পারতো

সিরিজ দেখে মনে হলো একটা পর্বের সময় নিম্নে কত মিনিট হতে হবে সেটা বেঁধে দেয়া দরকার। হইচইয়ে বিশ মিনিটের আশপাশে পর্ব দেখেই যেখানে রাগ হয়, সেখানে বিঞ্জের ছয় পর্বের এই সিরিজ একেকটা গড়ে ষোল মিনিট! গল্পে কোন টুইস্ট নাই, ক্যারেক্টার বিল্ড আপ নাই, অন্তরঙ্গ দৃশ্য বলে যা দেখানো হয়েছে তা হাস্যকর ছিল, কাহিনীর সাজানোটা কোন আগ্রহ জাগায় না বা তেমন কিছু নেই যা দর্শক আসলে জানে না। তাই বারবার প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন দেখছি! 

ভালো দিক- এই সিরিজে ত্রপা মজুমদারের ফিরে আসা। গুণী অভিনেত্রী বলেই খুব কিছু করার না থাকলেও পারফেক্ট চরিত্রায়ন হয়েছে তার। যদিও সোহেল মণ্ডলের মায়ের ভূমিকায় তাকে মানতে অনেকের আপত্তি থাকবে। সোহেল মণ্ডলকে বাড়তি কোন চ্যালেঞ্জ নিতে হয় নি, একজন ধনকুবেরের ছেলে হিসাবে বেশ ভালই করেছে। তবে তার চরিত্রে ছিল কনফ্লিক্ট, কেন সে হত্যা করছে আর কেনই বা হতাহতের জন্য কাঁদছে কিংবা কেনই বিয়ে করে পরকীয়া বজায় রাখছে বা ডিভোর্স দিতে চেয়েও কেন হানিমুনে যাচ্ছে এসবের উত্তর 'মাহের' চরিত্রে নেই। 'কুহু' চরিত্রে ঠিকঠাক মম। সাদিক স্বর্ণা বেশ ভাল করেছে 'অফিস স্টাফ' হিসাবে। তবে এদের থেকেও তমা মির্জাকে বেশি ভাল লেগেছে 'রিনি' চরিত্রে। অল্প প্লেসমেন্টেও তমার চেষ্টাটা ভাল ছিল।

ত্রপা মজুমদার; বহুদিন পর!

ডাবিং ছিল সবচেয়ে বাজে। অনেক জায়গায় বিজিএম নেই, অনেক জায়গায় হুট করে চলে আসছে। মম'র ভয়েস অনেকবার ভিন্ন কেউ দিয়েছে বলে মনে হলো। ডিসস্ট্যান্স শট অথচ ভয়েস ক্লোজ ছিল অনেকখানে, শ্বাস ফেলার শব্দ কানে বাজেভাবে এসেছে।

পুনশ্চ- এই অভিব্যক্তি লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত। এই লেখার সর্বময় কর্তৃত্ব এবং দায় লেখকের ওপরেই বর্তায়।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা