'বেবি'স ডে আউট' এর সেই শিশুটি আজ কোথায়?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

অজস্র সব সিনেমার আইকনিক ক্যারেক্টারগুলোর কথা চিন্তা করলে কেমন যেন অদ্ভুত লাগে! সময়ের ফেরে কারো চেহারাই আর আগের মত নেই। আচমকা, বহুদিন পরে যখন তাদের সাথে দেখা হয়, চেহারা দেখে বিভ্রম ঘটে...
যারা খুব কম সিনেমা এবং যারা খুব বেশি সিনেমা দেখেন, এই দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে নানা বিষয়ে বিরোধ হলেও একটি বিষয়ে তাদের সবারই একই সুর লক্ষ্য করেছি বরাবর। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া একটি সিনেমা উভয় শ্রেণিরই পছন্দের তালিকার শীর্ষে। সিনেমাটির নাম- Baby's Day Out. সে বছরের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমার মধ্যেও এটি ছিলো শীর্ষে। এবং ওয়ার্ল্ড বেস্ট আইকনিক মুভিগুলোর মধ্যেও নাম করে নিয়েছিলো এই 'কমেডি' জনরার সিনেমাটি।
এই সিনেমার প্রোটাগনিস্ট সোনালীচুলো, গোলাপি গালের সেই গোলগাল 'বেবি বিংক' এর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? তিন অপহরণকারীকে কি ভীষণ নাস্তানাবুদই না করেছিলো এই একরত্তি শিশু! দুর্দান্ত 'বেবি বিংক' চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দুই যমজ ভাই৷ জ্যাকব জোসেফ ওরটন এবং অ্যাডাম রবার্ট ওরটন। না, এতে ভীমড়ি খাওয়ার কিছু নেই। হলিউডে ছোট শিশুর চরিত্রে 'টুইন' দিয়ে অভিনয় করানো খুবই স্বাভাবিক একটা প্রথা।
আমরা হয়তো ধরেই নিয়েছিলাম, সেই সোনালীচুলো শিশুটি হয়তো সেই একই বয়সে, সেই একই চেহারায় থমকে আছে। কিন্তু সম্প্রতি অনলাইনে সেই দুই যমজ শিশু'র চেহারা দেখে রীতিমতো চমকে উঠলাম। ভেবেছিলাম, সেই চিরন্তন 'বেবি বিংক'কে দেখবো৷ কিন্তু দেখলাম, প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক দুইজনকে। বুঝলাম, সময়৷ সময়ের ফেরে সব পাল্টে গিয়েছে৷
'দীপু নাম্বার টু' সিনেমার প্রোটাগনিস্ট দীপুকে বড়বেলায় দেখে চমকে উঠেছিলাম৷ 'বজরঙ্গি ভাইজান' এর 'মুন্নি'ও আজ অনেকটা বড়। আমাদের ছোট্ট সেই দীঘি আজ সিনেমার লিড রোলে অভিনয় করছে। 'সোনার কেল্লা'র কিশোর তোপসেকে সেদিন দেখলাম, চুলে পাক ধরেছে। আমরা কেন যেন ধরেই নিই, যাকে যেমন দেখেছিলাম, তাকে তেমনই দেখবো সারাজীবন। কিন্তু সেটাই আর হয়না। চমক ভাঙ্গে আচমকাই।
'বেবি'জ ডে আউট' সিনেমার এই দুই টুইনস বড় হতে হতে চলে গিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন মেরুতে। আইএমডিবি'র তথ্য অনুযায়ী- দুইজনের বয়স এখন উনত্রিশ। এই সিনেমার পর থেকে তারা আর অভিনয় করেনি অন্য কোনো সিনেমা, নাটক, প্রজেক্টে। এই দুই যমজ ভাইয়ের মধ্যে অ্যাডাম রবার্ট অরটন অনেকটাই পালটে গিয়েছেন আরেক ভাই জ্যাকব জোসেফ অরটন থেকে৷ অ্যাডামের পৃথিবী ঘোরার নেশা। এবং সে সেই নেশায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কমলালেবু গোলকের এদিকে-সেদিকে। আরেক ভাই অর্থাৎ জ্যাকব জোসেফ অরটন যুক্ত আছে সঙ্গীতের সাথে৷ দুই ভাই নিজেদের মতই তাদের জীবন যাপন করছেন।

এরকম অজস্র সিনেমার আইকনিক ক্যারেক্টারগুলোর কথা চিন্তা করলে কেমন যেন অদ্ভুত লাগে! সময়ের ফেরে কারো চেহারাই আর আগের মত থাকেনা। আচমকা, বহুদিন পরে যখন তাদের সাথে দেখা হয়, চেহারা দেখে বিভ্রম ঘটে। মান্না দে'র মত জিজ্ঞেস করতেও ইচ্ছে করে-
খুব জানতে ইচ্ছে করে, তুমি কি সেই আগের মতই আছো?
কেউই আগের মত থাকে না। এটাই দীর্ঘশ্বাসের কারণ।