প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, অভিনয় না শিখে আর বিটিভিমুখী হবো না
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

হঠাৎ আতিকুল হক চৌধুরী জানতে চাইলেন, আমি কোথায় অভিনয় শিখছি বা কোথায় থিয়েটার করছি? অকপটে ওনাকে বললাম আমি কোথাও শিখিনি অভিনয়। আমার আব্বা অভিনয় করেন, আমার দাদা যাত্রা করতেন। উনি হাসিমুখে বললেন...
শাহেদ আলী:
১৯৮৮ সালের জানুয়ারী মাস, শ্রদ্ধেয় আতিকুল হক চৌধুরীর সাথে দেখা করতে গিয়েছি বাংলাদেশ টেলিভিশনে। উদ্দেশ্য টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করবো, অভিনেতা হবো। স্কুলে পড়ি, আব্বার কোট আব্বার জুতা পরে গেছি, যাতে আমাকে একটু বড় দেখা যায়।
তখন বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়া ক্যামেরাতে কোথাও অভিনয় করার কোনো জায়গা আমার জানা ছিলোনা এবং এখনকার অনেকেই কল্পনা করতে পারবে না আতিকুল হক চৌধুরী সেই সময় টেলিভিশন এর কত বিশাল একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আতিকুল হক চৌধুরীর কাছে পৌঁছানোর পর অনেক সুন্দর করে কথা বললেন তিনি। আমি মুগ্ধ। ওনার আশ্বাসে আমি তখন অভিনেতা হবার স্বপ্নে বিভোর প্রায়।

হঠাৎ উনি জানতে চাইলেন, আমি কোথায় অভিনয় শিখছি বা কোথায় থিয়েটার করছি? অকপটে ওনাকে বললাম আমি কোথাও শিখিনি অভিনয়। আমার আব্বা অভিনয় করেন, আমার দাদা যাত্রা করতেন। উনি হাসিমুখে বললেন, "বাবা, অভিনয় করতে হলে অভিনয় তো শিখতে হবে, যতই তোমার রক্তে থাকুক, না শিখে তো অভিনেতা হতে পারবে না। অভিনয় সর্ব কলার কঠিনতম কলা। আমি তোমাকে ছোট ছোট জায়গায় অল্প অভিনয়ের সুযোগ দিতেই পারবো, কিন্তু তাতে তো শুধু টেলিভিশনে চেহারা দেখানো হবে। সেই অভিনেতাটা তো তুমি হতে পারবে না, যে অভিনেতা তুমি হতে চাও।"
আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে থাকলো তার কথা শুনে। একটা ঘোর লাগা অনুভব নিয়ে তার রুম থেকে বের হয়ে আসলাম। বিটিভি'র গেট দিয়ে বের হতে হতে নিজের সাথে নিজে প্রতিজ্ঞা নিলাম, অভিনয় না শিখে আর বিটিভিমুখী হবো না। আজকের আগে আর যাইনি বিটিভিতে অভিনয় করতে।
অভিনয় কত টুকু শিখতে পেরেছি জানি না, কিন্তু ২০২১ সালের ৩১শে জানুয়ারী প্রথম বাংলাদেশ টেলিভিশনএর কোনো নাটকে অভিনয় করেছি। কৃতজ্ঞতা মামুনুর রশিদ, ধন্যবাদ ফজলে আজিম জুয়েল।