বছরের পর বছর ধরে তিনি সংগ্রাম করছেন অভিনয় নিয়ে, ক্যারিয়ারে অজস্রবার প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা সয়েছেন। অবশেষে পেয়েছেন সাফল্যের দেখা, তাকদীরে 'মন্টু' চরিত্রে তার দুর্দান্ত অভিনয় লুফে নিয়েছে দর্শক, সোহেল মন্ডল এখন টক অফ দ্য টাউন! নিজের ক্যারিয়ার, স্ট্রাগল, তাকদীর, ভবিষ্যত চিন্তা- সবকিছু নিয়ে তিনি কথা বলেছেন 'সিনেগল্প'র সঙ্গে, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী হাসান মুন।

আমরা যখন পাশের দেশে মনোজ বাজপেয়ী, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি, পঙ্কজ ত্রিপাঠিদের দেখতাম তখন আপনাদের মনে হতো কীনা জানিনা কিন্তু আমার মনে হতো এই নায়ক-নায়িকাদের বাইরেও যে অভিনেতাগুলো আছে, যারা দু-চার মিনিটের সিন পেলেও নিজের সর্বস্বটা বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করতো না, যারা একটু ভালো রাইটিং পেলে নিজের অভিনয় দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দর্শকের মনে ছাপ ফেলে যেত সেরকম অভিনেতাগুলোকে কি আমাদের দেশের ফিল্ম-সিরিজে পাবো না? মনোজ-নওয়াজ-ত্রিপাঠিদের পর রাজকুমার-আয়ুষ্মান-বিক্রান্তরা ঠিকই উঠে এসেছে এবং আরও বড় করছে সে পরিধি কিন্তু আমরা তেমনটা পেলাম কই? আমরা ঘুরে ফিরে চঞ্চল, মোশাররফ, ফজলুর রহমান বাবুদের কাছেই যাই। তাদের ক্যালিবার অনুযায়ী চরিত্রও কি আমরা আদৌ দিতে পেরেছি?

ক্যারেক্টার অ্যাক্টরদের এমন সঙ্কটে ওটিটি ভালো একটা বুম এনেছিল আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে। আমাদের দেশেও সেরকম কিছু এক্সপেক্ট আমরা করতেই পারতাম। কিন্তু ওটিটিতেও যেন আমরা ভুগছিলাম মানসম্পন্ন কন্টেন্ট সঙ্কটে। সে সুযোগ বুঝে হইচই নিয়ে এসেছে তাকদীর। একদম পুরোদস্তুর বাংলাদেশি প্রোডাকশন। চঞ্চল, প্রীতি, মনোজ, পার্থ, ইন্তেখাব দিনারের মতো অভিনেতা থাকার পরও এই সিরিজের সবটুকু আলো বলতে গেলে একাই কেড়ে নিয়েছেন মন্টু ওরফে সোহেল মন্ডল। এরপর থেকেই মন্টুকে নিয়ে তোলপাড়! কে এই ছেলে? কই ছিল এতদিন?

অথচ সোহেল মন্ডল ছিলেন আশেপাশেই। কাজ খুঁজছিলেন, থিয়েটার করছিলেন, কখনো বা রাস্তায় পথ নাটক করতে দেখে তাঁর দিকে বিরক্তিভরে তাকিয়েও ছিলাম হয়তো আপনি-আমি। অথচ সে সোহেল এখন মন্টু হয়ে রীতিমত দর্শকদের প্রিয় চরিত্রে পরিণত হয়েছে। মন্টুকে জানার জন্য, সোহেল মন্ডলকে জানার জন্য তাই তাঁর সাথে সরাসরি কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। তাই একদম বৈঠকি ঢঙে আড্ডা দেয়া হল সোহেল মন্ডলের সাথে। সেখানেই উঠে এসেছে তাঁর শুরুর গল্প, তাকদীরের মন্টুর গল্প, কেন তাঁর পা মাটিতেই আছে আর কেনই বা তিনি শুধু থিয়েটারেই থাকতে চান, এসবসহ আরও অনেক কথা। চলুন জানা যাক মন্টুকে, জানা যাক সোহেল মন্ডলকে।

মেহেদী হাসান মুন- সোহেল ভাই, অভিনেতা হবার স্বপ্ন কেন দেখলেন? জীবনের কোন সময়টায় এসে মনে হল যে আমি অভিনেতা হতে চাই?

সোহেল মন্ডল- অভিনেতা হবো এরকম কোন ইচ্ছা কখনো পোষণ করিনি যখন এসএসসি বা ইন্টারমিডিয়েটে পড়ছিলাম। তবে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য যখন ঢাকায় আসি তখন প্রচুর অবসর সময় পেতাম। তো সেই অবসর সময়টাকে কাজে লাগানোর জন্য আমি নাগরিক ন্যাটাঙ্গন ইনস্টিটিউট অফ ড্রামার থিয়েটার স্কুলে ভর্তি হই। থিয়েটার স্কুলে ৬ মাস ক্লাস করার পর আমি দলের সাথে কাজ করা শুরু করি। ওদের সাথে কিছুদিন কাজ করার পরে একটা ভালোলাগা তৈরি হয়ে যায়। এর মাঝে প্রাচ্যনাটের নাটক দেখে আমার খুব ভালো লাগা শুরু হল, ওদের কম্পোজিশন, কাজ দেখে আমাদের বেশ উদ্যমী লাগতো। প্রাচ্যনাটের স্কুলে ৬ মাসের ক্লাস শেষ করে আমি দলের সাথে যুক্ত হই। আর তখন থেকেই যা হয় আর কী অনেকের অভিনয় দেখে, রিহার্সেল দেখে একটা ভালোলাগা কাজ করতো। আমি যেহেতু খুব একা মানুষ সেজন্য গান, বই, নাটক, সিনেমা এসবের মাঝেই নিজেকে ব্যস্ত রাখতাম।

থিয়েটারে এসে দেখলাম দল বেঁধে সবাই কাজ কর‌ছে। হারমোনিয়াম থে‌কে শুরু তবলা, ভা‌য়ো‌লি‌ন, বাঁশি, ক্ল্যা‌রি‌নেটসহ নানা ইন্সট্রু‌মেন্টের ঝঙ্কার শরীর-ম‌নে এক অদ্ভূত শিহরণ তুলতো। আমাদের দ‌লের একটা সুন্দর ব্যাপার হ‌চ্ছে নতুন যে ছেলেটা দলে জয়েন ক‌রে তাকেও থি‌য়েটারের সকল ধর‌নের কা‌জে ইনভল্ভ ক‌রে ফেলা‌ হয়, যে কারণে থিয়েটারের কা‌জের প্র‌তি, অভিনয়ের প্র‌তি ভালোবাসাটা সহ‌জেই তৈ‌রি হয়ে যায়। পাভেল ভাই, প্রীতি আপু, তাকদীরেই অভিনয় করেছেন সজিব ভাই, রিঙ্কন ছিল, রাহুলদা জলের গানের তারা তখন নিয়মিত থিয়েটার করতেন। আমি মুগ্ধ হয়ে তাদের কাজ দেখতাম। সাহানা রহমান সুমি আছেন, কী যে অসাধারণ অভিনেত্রী, শাহেদ আলি সুজন। এনাদের সান্নিধ্যে এসে, কাজ দেখে শিখছিলাম। কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন আমার প্রথম নাটকের ডিরেকশন দিয়েছিলেন উনি, আমাকে সবসময় উৎসাহ দিয়ে গেছেন। বকুল ভাইয়ের সাথে কাজ করলাম দীর্ঘদিন, থিয়েটারের নানারকম কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলাম সেসময়। পথনাটক, লাঠিখেলা, গান, নাটক সবকিছুই করতাম তখন।

থিয়েটার লাইফটা ভীষণ উপভোগ করেন সোহেল মন্ডল

থিয়েটারে আপনি আসলে সবকিছুতেই পার্টিসিপেট করতে পারেন, আপনি দুর্বল হলেও প্র্যাকটিস করতে করতে আপনি একটা পর্যায়ে ঠিকই চলে যেতে পারবেন। ছোট একটা এন্সার দিতে গিয়ে আসলে অনেক বড় করে ফেলছি। আসলে ওগুলো করতে করতেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা শুরু হয় তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই যে অভিনয়টা করবো আমি। তবে অভিনয় করতে গেলেই তো হয় না, অভিনয় করতে গিয়ে কিছু এপ্রিয়েসিয়েশনও পাচ্ছিলাম তখন। সেই এপ্রিসিয়েশনটাও বড় একটা ভূমিকা পালন করেছে অভিনেতা হবার জন্য। প্রথমেই বলেছি আমি খুবই অন্তর্মুখী মানুষ কিন্তু আমি ভয়েস রেইজ করতে চাই, কথা বলতে চাই। অভিনয় এমন একটা মাধ্যম যেখানে আমি যে কথাটা বলতে চাই সেটা আমি অভিনয় করে এক্সপ্রেস করতে পারবো কারও সাথে কথা না বলেও। এরকম নানা অনুষঙ্গ থেকেই ভালোবাসা তৈরি হয় আর এপ্রিসিয়েশনগুলোও ইন্সপায়ার করেছে অভিনয়ে আসার জন্য।

মুন- আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি থিয়েটার লাইফটা বেশ এঞ্জয় করেছেন। সেক্ষেত্রে আমার পরবর্তী যে প্রশ্ন ছিল- ‘আপনার এতো বছরের স্ট্রাগল’ নিয়ে সেটা নালিফাই হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যে আপনি থিয়েটার এঞ্জয় করতেন, স্ট্রাগল বললে সেটাকে কি হালকা করা হয়ে যাবে? বা ওয়েব সিরিজ-সিনেমার মতো ফ্রন্টলাইন মিডিয়াতে আসার আগ পর্যন্ত সময়টাকে কি সবসময় স্ট্রাগল বলাও ঠিক?

সোহেল- ইচ এন্ড এভরি পিপলের স্ট্রাগল আছে। প্রতিটা হিউম্যান বিয়িং এর লাইফে স্ট্রাগল থাকেই। জীবন ধারণকে সহজ করার জন্য যে যে পদক্ষেপ নেয় একজন মানুষ সেটাকেই আমরা স্ট্রাগলের খাতায় হয়তো ফেলতে পারি। সে অর্থে আমার লাইফেও ওইটুকু স্ট্রাগল ছিল কিন্তু স্ট্রাগলকে আসলে গ্লোরিফাই করার কিছু নেই। হ্যাঁ, অবশ্যই আমি থিয়েটার লাইফটা ভীষণ ইনজয় করেছি। থিয়েটার আমাকে শিখিয়েছে হাউ টু কম্যুনিকেট উইথ পিপল। থিয়েটারের বন্ধুদের চিন্তাভাবনা, আইডিয়াজ যেগুলা আর আট-দশটা আড্ডাবাজিতে মিসিং থাকে, আমি বলছি না যে সব আড্ডা কন্সট্রাকটিভ হতে হবে। কিন্তু চা খাবার সময়, বিড়ি ফুঁকার সময়ও দেখা যেত আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করতাম। সে ব্যাপারগুলো আমাকে খুব এন্টারটেইন করতো।

আমি যখন শুরু করি তখন প্রতিদিনই থিয়েটারে যেতাম। পকেটে টাকা থাকতো না একেবারেই, অনেক সময় বাসভাড়াও দিতে পারতাম না। কিন্তু থিয়েটারে আসার লোভ সামলাতে পারতাম না। ঐ আড্ডা উপভোগ করতে করতেই আমাদের কাজগুলো আমরা করতাম। আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা ভয়েস রেইজ করতাম, পথনাটক করতাম। আসলেই আমি থিয়েটার জীবন প্রচণ্ডরকম ইঞ্জয় করেছি। যদিও এখন অনিয়মিত, শুধু শো হলেই যাচ্ছি। জীবনের তাড়নায় এখন থিয়েটারে নিয়মিত যাওয়া হচ্ছে না। আমি মিস করি, কিন্তু বেঁচে থাকার প্রয়োজনে এখন আর পারছি না।

যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থাকতো তাহলে হয়তো আমি থিয়েটারই করে যেতাম। আমি থিয়েটারই করতে চাই, আমি অভিনয়ই করতে চাই, থিয়েটারের জিনিসিপত্র নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। আমার অর্থনৈতিক স্থিরতা যদি থিয়েটার থেকে আসতো তাহলে আমি থিয়েটারই করে যেতাম, আমার অন্যকিছু করতে যাবার কোন দরকারই ছিল না আর আমি চাই ও না। আমি মিস করি থিয়েটার লাইফটা। স্টিল নাও যতটুকু সামর্থ্য আছে আমি থিয়েটার করে যেতে চাই। তো আমি আসলে স্ট্রাগল করেছি, সবার লাইফেই আছে সেটা তবে আমি থিয়েটার লাইফটাও ইঞ্জয় করেছি এবং এখনো করি।

মুন- সেক্ষেত্রে ওয়েব সিরিজ/নাটক/সিনেমা এগুলোতে যাবার সিদ্ধান্ত কখন নিলেন? শুধু অর্থনৈতিক স্টেবিলিটির জন্য তো নিশ্চয়ই এই সিদ্ধান্ত নেন নি। কারণ, আমি যতটুকু জানি আপনি দীর্ঘদিন ধরে অডিশন দিচ্ছেন, রিজেক্ট হচ্ছেন, কোথাও কোথাও ডাক পাচ্ছেন। তো এই বিষয়গুলো কখন এলো আপনার অভিনয় জীবনে?

সোহেল- সত্যি কথা বলতে আমি কিছু জায়গায় লাকিও। আমি ঐ অর্থে বেশি জায়গায় অডিশন দেই নি। আমার প্রথম শুরুটা হয় টিভিসির মাধ্যমে। রবির একটা প্রোডাকশন ছিল ঘ্যাচাং নামে, ২০১২ সালে হয়তো। আমাদের দেশে আসলে অডিশন দেবার কোন সিস্টেম নাই ফিকশনে কাজ করার জন্য। এটা খুবই ঘরোয়াভাবে হয়। নিজেদের পছন্দের লোকজন দিয়ে, যখন যাকে মনে চায়। খুব কম বড় কাজে অডিশনের ব্যবস্থা থাকে। তবে এখন চেঞ্জ হয়েছে, এখন প্রচুর অডিশন হচ্ছে। তবে আমি যখন শুরু করি তখন অডিশনের ব্যাপারটা একেবারেই কম ছিল। আর আমি তো আরও জানতাম না যে কোন হাউজে কী অডিশন হচ্ছে। ঐ সময় কিছু টিভিসির অডিশন দিতে গিয়ে আমার ব্যাড এক্সপেরিয়েন্স হয়েছিল তখন আমি ডিসিশন নেই যে আমি কোন অডিশন দিবো না বড় কোন ফিকশনের জন্য না হলে। তখন আমি থিয়েটারের কাজের পরে যেটা করতে চেয়েছিলাম সেটা হচ্ছে সিনেমা। কারণ আমার মনে হচ্ছিল যে আরও বেশি লোকের কাছে যাবার জন্য এজ এ এক্টর হিসেবে সিনেমাই বেস্ট অপশন। এটা আসলে ঋত্বিক ঘটকের মতো একটা কথা হলো, কিন্তু আসলেই একজন অভিনেতা হিসেবে আমার সিনেমার প্রতি লোভ ছিল খুব।

আমার এখনো মনে আছে নাইন-টেনে স্কুল পালিয়ে আমরা সিনেমা দেখেছি প্রচুর। আমার থানাতে তিনটা হল ছিল তখন। তাই সিনেমার অডিশনের জন্য বসে ছিলাম কিন্তু ১২-১৩ এর দিকে আপনি পরিচিত না হলে, কম্যুনিকেশন না থাকলে সিনেমায় রোল পাওয়া দুষ্কর ছিল। আমি তখন একটু হোপলেসই ছিলাম তাও একটা সুপ্ত বাসনা ছিল যে যদি কখনো সুযোগ আসে সিনেমাই করবো। এরপর ২০১৩ তেই আমি রুবায়েত হোসেনের আণ্ডার কন্সট্রাকশনে সুযোগ পেয়ে যাই। তো ঐ কাজটা করার পর আমি নিজে অনেক কনফিডেন্ট হয়ে যাই। যদি বছরে আমার একটা কাজও করতে হয় আমার একটা ব্যাকআপ তৈরি রাখা দরকার। তাই বন্ধুরা মিলে আমরা একটা প্রতিষ্ঠান দেই, এডিটিং করি। ইন্ডাস্ট্রিতেই থাকতে চেয়েছিলাম, অভিনয়ের সুযোগ না পেলেও যেন ইন্ডাস্ট্রিতেই থাকি। আর যখন সুযোগ পাবো তখন ভালো কাজগুলোই শুধু করবো। স্টিল নাও আমার সেই মানসিকতাই আছে, জানিনা কতদিন ধরে রাখতে পারবো। তবে আমি চেষ্টা করে যাব শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভালো গল্পে, ভালো সিনেমায় কাজ করার জন্য। ওয়েব সিরিজ তো কেবল আসলো মাত্র, এর আগে কয়েকবার ট্রাই করেছি টেলিভিশনে কাজ করার জন্য। আমি ভীষণভাবে হোপলেস হয়ে গিয়েছিলাম টেলিভিশনে কাজ করতে গিয়ে। ২০১৭ সালে অস্থির সময়ে স্বস্তির গল্পে শ্যাওলা নামের একটা প্রোডাকশনে কাজ করার পর তাই আর টেলিভিশনে কাজ করা হয় নি। ডিসিশন সিনেমা করারই ছিল, ওয়েব সিরিজ তো ২০১৮ এর পরে এলো।

তবে লিটারেলি এখন আমার ওয়েব সিরিজকে সিনেমার চেয়েও স্ট্রং মনে হয়। এই অর্থে যে থিয়েটারে যেমন আমরা একটা ক্যারেক্টারকে বিল্ড করতে পারতাম, এক্সপ্রেস করতে পারতাম তেমনি ওয়েব সিরিজে একটা ক্যারেক্টারকে বিল্ড আপ করার অনেক সময় পাওয়া যায়। যেটা সিনেমায় পাওয়া যায় না। সিনেমার গল্প দেখা যায় প্রোটাগনিস্ট-এন্টাগনিস্টকে নিয়ে ঘুরপাক খায়। তো এটা একটা এমন জায়গা যেখানে অভিনেতারা ক্যারেক্টার বিল্ডাপ করার জন্য সময় পাচ্ছে, নুয়ান্স এড করতে পারছে।

তো সবমিলিয়ে আসলে আমি সিনেমা করতে চেয়েছিলাম, ভাস্ট অডিয়েন্সের কাছে যেতে চেয়েছিলাম, এপ্রিসিয়েশনের একটা ক্ষুধা ছিল, ভালো কাজ করবার ক্ষুধা সেজন্যই আবার ওয়েব সিরিজ, সিনেমায় কাজ করতে আসা। আর রিজেকশন নিয়ে আবার কোন প্যারা নেই, কারণ প্রচুর রিজেকশন পেয়েছি। আমি একটু উল্টো করে ভাবি যে আমি হয়তো প্রিপেয়ারড হই নি এজন্য কাজ পাই নি, আর যখন পেয়েছি তখন মনে হয়েছে যে আমি প্রিপেয়ার্ড। ইটস অল এবাউট কাজ শেখা, পরিশ্রম করা ও নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা। আমি বিশ্বাস করি যে পরিশ্রমী মানুষকে কেউ আটকে রাখতে পারে না।

মুন- তাকদীরের কাজ যখন করছিলেন তখন কি ক্যারেক্টার আর্ক বা রাইটিং দেখে মনে হয়েছিল যে এই চরিত্রটা এতোটা ভালোবাসা পাবে মানুষের?

সোহেল- বিন্দুমাত্রও না। রাইটিং দেখে অবশ্য আমরা মজা পাচ্ছিলাম। শাওকি যখন প্রাইমারি একটা ড্রাফট করে তখন আমার সাথে কথা হয়। সেকেন্ড ড্রাফটের সময় আমাকে ও বলে যে একটা ক্যারেক্টার দাঁড় করাচ্ছি তোমার জন্য, বেশ হিউমারাস। এরপর ড্রাফটের পর ড্রাফট হয়, আমরা আলোচনা করি যে কী কী নুয়ান্স এড করা যায়। ওরা ৫-৬টা ড্রাফট করেছিল প্রায় স্ক্রিপ্টের। যেহেতু মন্টু একটা লিনিয়ার ক্যারেক্টার, কোন আপস এন্ড ডাউন নেই ওর ক্যারেক্টারে সেজন্য কী কী এড করা যায় ওর সংলাপে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে, ভাইছাকে নিয়ে ওর যে ইমোশন সেটা নিয়ে লিনিয়ারভাবে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু তখন ঘুণাক্ষরেও আমরা বুঝতে পারি নি যে মন্টুকে নিয়ে এভাবে রেসপন্স করবে দর্শক। পুরোটাই মাসুমের লেখা আর শাওকির ডিরেকশন আর আমি যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি আর কী।

মুন- মন্টুর ক্যারেক্টারের জন্য আপনার প্রসেসটা কি ছিল? কীভাবে নিজেকে মন্টুর চরিত্রে ধারণ করলেন? তাকদীরের প্রতি মন্টুর যে যুক্তিহীন ভালোবাসা সেটার লজিকটা কখনো ভেবেছেন কীনা বা কোন ব্যাকস্টোরি সাজিয়েছিলেন কীনা?

সোহেল- একটা ব্যাকস্টোরি ডিরেক্টর-রাইটারের কাছ থেকে দেয়া ছিল। আমরা যখন স্ক্রিপ্ট রিডিং করি তখনই সে স্টোরির লজিক নিয়ে আলোচনা করি। ও ছোটবেলায় মাদ্রাসায় পড়তো, বেশ্যাপাড়ায় বড় হয়েছে, প্রথমে বেশ্যাদের দালালী করতো এরপর তাকদীরের সাথে অবৈধ মাছের ব্যবসা শুরু করে। একটা ব্যাকস্টোরি ডিরেক্টর ও রাইটার মিলে লেখার সময় তৈরি করে ফেলেন আর নেক্সট স্টেপে আমি ক্যারেক্টার তৈরি করার জন্য আমি থিয়েটার থেকে শেখা কিছু প্রসেস ব্যবহার করি। প্রত্যেকটা অভিনেতার পদ্ধতিই আসলে আলাদা, একটার সাথে আরেকটাকে মেলানো যাবে না। আমার প্রিপারেশনটা একদমই আমার মতো করে, কিছুটা গ্রামাটিক্যাল, কিছুটা গ্রামারের বাইরে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে কাজটা করি সেটা হল আমি স্ক্রিপ্টটা বারবার পড়ি। তাঁর কনভারসেশনগুলো, তাঁর সাথে অন্য ক্যারেক্টারের কনভারসেশন পড়ে পড়ে তাঁর ক্যারেক্টারের নুয়ান্সগুলো বোঝার চেষ্টা করি। সে কতটুকু রাগী, সে কীভাবে রাগে, সে কি আদৌ কান্না করতে পারে কীনা, তাঁর কান্নার ধরণ কেমন হতে পারে, সে যে ক্ষেপে যায়, একটু আউলা সেটা কোথা থেকে এসেছে, এসব বিষয় বোঝার চেষ্টা করি। এখান থেকে বোঝার চেষ্টা করেছি কিছু আর কিছুটা বুঝেছি ব্যাকস্টোরি থেকে।

মন্টু চরিত্রে সোহেল মন্ডল

আবার ও কোন ভাষায় কথা বলবে সেটাও একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল। আমরা মূলত প্রচলিত ভাষাই ব্যবহার করেছি কিন্তু আমাদের ইচ্ছা ছিল শরিয়তপুরের একসেন্টটা ট্রাই করবো কিন্তু সময় কম থাকায় আমরা আর রিস্ক নেই নি। তো এসব মিলিয়েই পুরো প্রসেসটা তৈরি হয়েছে। আমি বারবার রাইটার-ডিরেক্টরের সাথে কথা বলতাম, জিজ্ঞেস করতাম যে- ও যে কাজটা করছে সেটা কেন করছে? তো সবকিছু মিলিয়েই আর কী এভাবে আমি মন্টুকে তৈরি করতে চেয়েছি।

আর তাকদীরের প্রতি মন্টুর যে যুক্তিহীন ভালোবাসা সেটা কিন্তু যুক্তিহীন না। এটার কারণ আছে। শেষ দিকের এক সিনে যখন দেখায় মাদ্রাসায় পড়া মন্টু তাকদীরের মায়ের জানাজা পড়ছে সেটার কিন্তু একটা ব্যাকস্টোরি আছে। তাকদীরের মা মন্টুকে নিজের ছেলের মতোই পেলেপুষে বড় করেছে, খেতে-পড়তে দিয়েছে। এধরণের মানুষ কারও কাছ থেকে কোন সহায়তা পেলে সেটার যে কৃতজ্ঞতাবোধ সেটা ভীষণরকম মাটির, অথেন্টিক। এজন্য তাকদীর নিজের বিপদ আপদে অন্য যে কারও চেয়ে মন্টুকেই বেশি আপন ভেবেছে। এজন্য তাদের এই পারস্পারিক ভালোবাসাকে কিন্তু একেবারেই অযাচিত বলা যাবে না।

মুন- তাকদীরের পরে জীবনে বা নিজের চারপাশে কী কী পরিবর্তন এসেছে? এই হুট করে পাওয়া পরিচিতি, এক্সপেক্টেশন এগুলো ইঞ্জয় করছেন নাকি এক্সপেক্টেশনের কারণে একটু প্রেশারও ফিল করছেন?

সোহেল- আমি আসলে প্রথম ৩-৪ দিন একদম ব্ল্যাংক ছিলাম। আমি নিজেই আসলে নিজেকে অনেক ক্রিটিক করি। যে কারণে আমি আমার কাজ বারবার দেখি আর ভাবি যে এই জায়গাগুলোতে ভালো করার সুযোগ ছিল আরও। তাই আমি যখন তাকদীর দেখেছি তখন আমি ঠিকই আমার ভুল-ঠিক ধরতে পেরেছি, সীমাবদ্ধতাগুলো টের পেয়েছি। এরপরও যেসব ফিডব্যাক এসেছে, এপ্রিসিয়েশন এসেছে আমার খুব ভালো লেগেছে কিন্তু স্টিল নাও আমার পা দুটো মাটিতেই আছে। দর্শকদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি এটুকুই আসলে। কালকেই যদি আরেকটা কাজ খারাপ হয় তাহলে এই ফিডব্যাক থাকবে না। আমার জন্য এখন কঠিন হয়ে গেছে কারণ আমি আনন্দ নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত।

কিন্তু এখন মনমতো করে কাজ করতে গিয়ে হয়তো এই এক্সপেক্টেশনের কারণে একটা প্রেশার ক্রিয়েট হলেও হতে পারে আমার মাঝে যে, অডিয়েন্সের জন্য ভাবি, অডিয়েমস কেমন চায়! কিন্তু সব কাজ তো আর একরকম হবে না। আর সব কাজ ক্লিকও করবে না। তো এজন্য এখন আমার সবচেয়ে বড় ভয় যে- মাটিতেই থাকা এবং আগের মতোই আনন্দ নিয়েই পরের কাজগুলো করা। তবে আমি ইঞ্জয় করছি, ইঞ্জয় যে করছি না এমন না। এটা খুবই আনএক্সপেক্টেড একটা সারপ্রাইজ। একজন আমাকে বলেছিল যে- নিজের কাজের কোন এপ্রিসিয়েশন আসলে নিজেকেও একটু এপ্রিশিয়েট করতে হয়। তবে আমি জানি যে এই কাজেও আমার অনেক ভুল আছে, এপ্রিসিয়েশনকে মাথায় রেখেও আমার ইচ্ছা যে এই ভুলগুলোতে শুধরে নিয়ে পরবর্তীতে আরও ভালো কাজ করার।

মুন- আপনার সহ অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরি যেভাবে নিজেকে নিয়ে ভাঙা গড়ার খেলা খেলেছেন ও সফল হয়েছেন সেটা দেখে কি অনুপ্রেরণা পান? ওনার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? উনি তো সম্প্রতি আপনাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।

সোহেল- চঞ্চল ভাই ভীষণ রকমের মাটির মানুষ। আপনাদের যদি কখনো ওনার সাথে বসে আড্ডা দেয়ার সুযোগ হয় তাহলে দেখবেন যে ক্যামেরা অন হলে উনি হয়তো চঞ্চল চৌধুরী কিন্তু ক্যামেরা অফ হলে উনি আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। আমি ওনাকে দেখে অবশ্যই ইন্সপায়ার্ড হই, চঞ্চল ভাই-মোশাররফ করিম ওনাদের কাজ দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু যার যার জার্নিটা আসলে তাঁর তারই। আমার জার্নিটাও আমার নিজেকেই করতে হবে। চঞ্চল চৌধুরী যেভাবে নিজেকে নিয়ে ভাঙা-গড়ার খেলা খেলেছেন সেটা আমি পারবো কীনা, বা আদৌ আমার সে ক্যাপাবিলিটি আছে কীনা সেটা আমি কাজ করতে করতেই বুঝবো।

এটা চঞ্চল ভাইয়ের সাথে আমার তৃতীয় কাজ। প্রথম সিনেমা আয়নাবাজি ছিল, দ্বিতীয় সিনেমা হাওয়া-তে কাজ করেছি তাঁর সাথে টানা ৪০ দিন এরপর তাকদীরে কাজ করেছি। ওনার সাথে আমার কম্ফোর্ট জোন ছিলই। তবে যদি আমার প্রথম কাজও হতো তাহলে চঞ্চল ভাই ঠিক একইভাবে সহযোগিতা করতেন আমাকে। আর ওনার প্রশংসা আসলে ওনার বদান্যতা, ওনার বিনয়। তাঁর কাছে আমি চরমভাবে কৃতজ্ঞ হয়ে গেছি, প্রচণ্ড আবেগ কাজ করছে এটা নিয়ে আমার ভেতরে। আশা করছি যারা নতুন কাজ করতে আসবে তারাও ইন্সপায়ার্ড হবে এটা দেখে।

চঞ্চলের সাথে সোহেলের কেমিস্ট্রি দর্শকনন্দিত হয়েছে

মুন- গল্প উপন্যাসের এমন কোন ক্যারেক্টার আছে যেটা সিনেমায় পোট্রে করতে ইচ্ছে করে? বা সিনেমার এমন কোন চরিত্র যেটা দেখে মনে হয়েছে যে- আমি যদি করতে পারতাম এই রোলটা।

সোহেল- সিনেমার ক্ষেত্রে যে ধরণের চরিত্র হয়ে গেছে সেটা আমার করার আর ইচ্ছা নেই আসলে। তবে আমার বায়োপিক করার ইচ্ছা আছে। একটা রিয়েল লাইফ ক্যারেক্টার হয়ে উঠতে ইচ্ছে হয় আমার, কারণ বায়োপিক প্রচণ্ড কঠিন মনে হয় আমার কাছে। এই চ্যালেঞ্জটা নিতে তাই ইচ্ছে হয় খুব। এছাড়া যেকোনো চ্যালেঞ্জিং ক্যারেক্টারই আমার মাঝে এক্সাইটমেন্ট তৈরি করে। আর গল্প-উপন্যাসের ক্ষেত্রে ন হন্যতের মীর্চা হতে চেয়েছি, পার্থিবের চরিত্র করতে চেয়েছি, হুমায়ূন আহমেদের শুভ্র হতে চেয়েছি, দূরবীনের ধ্রুব হতে চেয়েছি, এরকম অনেক ক্যারেক্টার আছে যেগুলো করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু হয়তো ভিজুয়ালি ওদের দেখতে ভালো লাগবে না, পড়ে ইমাজিন করতেই বেশি ভালো লাগবে। আরেকটা মজার কথা বলি যে আমার কিন্তু কমেডি করার অনেক ইচ্ছা। বায়োপিক আর কমেডি আমার খুব কঠিন মনে হয়। আর আমার কিন্তু নাচের ট্রেনিংও আছে, তাই নাচাগানা করা কমার্শিয়াল সিনেমাও আমি করতে চাই, হাহাহা!

মুন- সামনে কোন কোন কাজে দর্শক আপনাকে দেখতে পারবে?

সোহেল- সামনে বড় দুটো কাজ আসছে আমার, যেগুলো আসলে তাকদীরের আগেই আসার কথা ছিল। মায়ার জঞ্জাল নামে একটা কাজ আসবে, যেটা ২০১৮ সালেই শেষ করেছিলাম। ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরীর এই কাজটা, যার ফড়িং ও ভালোবাসার শহর নামে দারুণ দুটো কাজ আছে। এই দেশের অনেকেই তাকে চিনবেন। সেখানে ঋত্বিকদা আছেন, অপি করিম আছেন, সেটা একটা বড় কাজ। এটা অলরেডি পৃথিবীর বড় দুটো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিলেক্টেড হয়েছে, মস্কো আর সাংহাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। রিসেন্টলি রোমের এক ফেস্টিভ্যালে জুরি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। জয়েন্ট ভেঞ্চার (নতুন নিয়মে) হিসেবে হয়তো প্রথম সিনেমা হিসেবে কলকাতা ও বাংলাদেশে ২০২১ সালের মার্চে মুক্তি পাবে একযোগে।

আরেকটা যেটা আসছে মেজবাউর রহমান সুমন ভাইয়ের হাওয়া, যেখানে আবারও চঞ্চল চৌধুরী আছেন, নাজিফা তুশি আছেন, শরিফুল রাজ আছেন, আরও দারুণ দারুণ সব অভিনেতা আছেন। আমি মনে করি যে এই কাজটা বাংলাদেশের সিনেমার প্রেক্ষাপটে বড় একটা কাজ হতে যাচ্ছে, ভালো একটা কাজ আসছে। যদিও সবাই নিজের সিনেমাকে ভালোই বলে কিন্তু আমি মনে করি এই সিনেমাটা হলে দর্শক খুব এঞ্জয় করবে। আরেকটা কাজ আসছে নতুন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের সাথে নোনাজলের কাব্যের ডিরেক্টর যিনি। একটা শর্টফিল্ম করেছি ওনার সাথে। বর্তমান সময়ের প্যান্ডেমিক সিচুয়েশন নিয়ে কাজটা করা, একটা ডিস্টোপিয়ান সিচুয়েশনকে পোট্রে করেছেন ডিরেক্টর। এছাড়াও সামনে কিছু ওয়েব ফিকশন করার কথা চলছে। একটা প্রমিনেন্ট প্ল্যাটফর্মের জন্যই করা হচ্ছে, প্রাইমারি কথাবার্তা হয়েছে। এখন দেখা যাক সেখানে কী হয়।

মুন- অসংখ্য ধন্যবাদ সোহেল ভাই। আপনার কাছ থেকে দারুণ দারুণ সব কাজ আশা করছি আমি, আমরা সবাই। শেষমেশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতে চান।

সোহেল- একটা কথাই বলতে চাই যে ভালো কাজের জন্য আপনারা মুখিয়ে আছেন, ভালো কাজের এপ্রিসিয়েশন আপনারা করেন। ভালো কাজ পেলে সামনেও এপ্রিশিয়েট করবেন, সেটিকে ছড়িয়ে দেবেন। সেটা আমাদের ক্ষেত্রেও হয়েছে। কিন্তু যেহেতু আমাদের কাজটা যে প্ল্যাটফর্ম থেকে এসেছে সেটা নতুন তো আপনারা যদি আমাদের কাজটা বা যেকোনো ভালো কাজ কিনে না দেখেন তাহলে সেটা কিন্তু সে কাজের সাথে জড়িত সবার ওপরেই ইমপ্যাক্ট ফেলে। আমি জানি আপনারা খুবই দায়িত্ববান সকলে, তাই আশা করবো যে আপনার কন্টেন্ট কিনে দেখবেন, সাবস্ক্রাইব করে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। প্যান্ডেমিকের এই সিচুয়েশনে সবাই সেইফ থাকার চেষ্টা করবেন আর দোয়া রাখবেন যেন আপনাদের এন্টারটেইন করে যেতে পারি। ধন্যবাদ সবাইকে।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা