
ওটিটি প্লাটফর্মের যে স্বাধীনতা, ভারতে সেটি এবার নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হতে যাচ্ছে। অ্যামাজন এবং নেটফ্লিক্স তাদের কন্টেন্ট ও চিত্রনাট্যগুলো সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করছে, বিতর্ক তৈরী হওয়ার মতো দৃশ্য থাকলে বাদ দিচ্ছে- যেটি আগে কখনো ঘটেনি...
ওটিটি প্লাটফর্মের যে স্বাধীনতা সেটি এবার নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হতে যাচ্ছে বলেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সাইফ আলী খান অভিনীত অ্যামাজন প্রাইমের ‘তান্ডব’ ওয়েব সিরিজে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে ভারতজুড়ে ছিলো উত্তপ্ত পরিস্থিতি। কিছুদিন আগে অ্যামাজন ক্ষমাও চেয়েছে ভারতের দর্শকদের কাছে।
তবে ব্যাপারটা শুধু ভুল বোঝা-ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলিউডের পরিচালক, প্রযোজক এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিটদের সূত্র ধরে এক প্রতিবেদনে জানায়, অ্যামাজনের প্রাইম ভিডিও এবং নেটফ্লিক্স’য়ের মতো স্ট্রিমিং সাইট তাদের কন্টেন্ট ও চিত্রনাট্যগুলো সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করছে, যেটি আগে কখনো ঘটেনি। এমনকি প্রচারের আগে বিতর্ক হতে পারে এরকম দৃশ্য বাদ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ওটিটি প্লাটফর্মের যে স্বাধীনতা ছিলো, সেটি অনেকাংশে খর্ব হবে এইবার আর অটো-সেন্সরশিপের মতো ঘটনা তো সময়ের ব্যাপার। আর এইসব কিছুর উৎস হিসাবে ভবিষ্যতে সবসময় উচ্চারিত হবে নয় পর্বের পলিটিকাল সিরিজ তান্ডবের নাম।
তান্ডবের জের ধরে, অ্যামাজন প্রাইম হিন্দি ভাষার নতুন স্পাই থ্রিলার ‘দি ফ্যামিলি ম্যান’-এর প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে। গত মঙ্গলবার অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্ষমা প্রার্থনা করে জানায় যে, কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার কোনোরকম ইচ্ছা বা অভিপ্রায় তাদের ছিল না, তারপরও অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও গভীরভাবে দুঃখিত। এই ধরনের ঘটনা নিকট অতীতে ঘটেনি আগে। তাহলে কি বদলে যাচ্ছে স্ট্রিমিং প্লাটফর্মগুলোর হালচাল?
ভারতে কমপক্ষে ১০টি মামলা দায়ের করা হয় এই ওয়েবসিরিজের বিরুদ্ধে। হিন্দু ধর্মের দেব-দেবীদের অপমান করে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া হয়েছে মর্মে মুহূর্তেই পুরো ভারতে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। এছাড়াও ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে কলুষিত করার অভিযোগও ওঠে সিরিজের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
এরপর জল গড়িয়েছে অনেকদূর। ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালায় ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলো কে নিয়ে নতুন করে ভাবছে- বসতে পারে ফিল্ম ইন্ড্রাস্টির মতো ওটিটি-সেন্সরবোর্ড। এছাড়াও চিত্রনাট্য কড়াভাবে পড়া হচ্ছে যেন কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি না হয়। সব মিলিয়ে স্ট্রিমিং সাইটগুলোর যে আসল সৌন্দর্য্য- মুক্ত ও অবাধ কন্টেন্ট নির্মাণের প্রেরণা- সেটি নষ্ট হবে বলে মনে করছেন অনেকে।