দ্য সাইলেন্স অফ দ্য ল্যাম্বসের অজানা ১০: অস্কারে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল যে সিনেমা!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

ত্রিশ বছর আগে আজকের দিনে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটায় মাত্র ১৬ মিনিট অভিনয় করেই অস্কার জিতেছিলেন অ্যান্থনি হপকিন্স! সেরা ছবি, অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালক এবং সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার ঘরে তুলেছিল সাইলেন্স অফ দ্য ল্যাম্বস- যেটা কীনা একটা রেকর্ড!
১৯৯১ সালের এই দিনে ভ্যালেনটাইন দিবসে মুক্তি পেয়েছিলো এন্থনি হপকিন্সের কাল্ট ক্লাসিক “The Silence of the Lambs”। হ্যানিবল লেকটার আর ক্ল্যারিস স্টার্লিং অভিনীত কালজয়ী এই থ্রিলার নিঃসন্দেহে যে কোনো সময়ের সেরা সিনেমার তালিকায় অবস্থান করবে এর মনস্তাত্ত্বিক লড়াই, দার্শনিক গুরুত্ব আর মানব মনের অজানা তলদেশে বিচিত্র এডভেঞ্চার চিত্রিত করার জন্য। ৫টি অস্কার জেতা এই সিনেমার ৩০ বছর পূর্তি হলো আজ, চলুন এই সিনেমার অজানা কিছু তথ্য জেনে নেই!

১) এখন পর্যন্ত একাডেমি পুরষ্কারের ইতিহাসে “বিগ ফাইভ অস্কারস” একসাথে জেতা তিনটি সিনেমার একটি। বিগ ফাইভ বলতে BEST PICTURE, ACTOR, ACTRESS, DIRECTOR আর SCREENPLAY- এই পাঁচটি বিভাগ কে বোঝানো হয়। অন্য দুটি সিনেমা হচ্ছে ক্লাসিক রম-কম It Happened One Night (১৯৩৫) আর অনবদ্য জ্যাক নিকলসনের One Flew Over the Cuckoo’s Nest (1975) ।
২) মাইকেল ম্যানের “মাইন্ডহান্টার” (১৯৮৬) সিনেমাটি হচ্ছে হ্যানিবল ফ্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা যেটি ১৯৮১ সালে প্রকাশিত
থমাস হ্যারিসের রেড ড্রাগন উপন্যাসের ভর করে নির্মিত। ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সুবিধা করতে পারেনি দেখে সিনেমাটির প্রযোজক ডিনো ডি লরেন্টিস হ্যানিবল লেকটারের স্বত্ব ছেড়ে দেন। এরপরে মুক্তি পাওয়া সাইলেন্স অফ দ্য ল্যাম্বস বক্স অফিস কাপিয়ে ফেলে, তুলে আনে ২৭২.৭ মিলিওন ডলার যেটি মাইন্ডহান্টারের সর্বমোট অর্জন থেকে ২৬৪ মিলিওন ডলার বেশি !

৩) পাগলা সাইকিয়াট্রিস্ট হ্যানিবল চরিত্রে এন্থনি হপকিন্স এর বিকল্প ভাবতে পারেন কাউকে? না, সম্ভব না এমন দুর্দান্ত অভিনয়শৈলি অন্য কারো পক্ষে! এই চরিত্রের জন্য কারা কারা পছন্দ ছিলেন জানেন? জেমস বন্ড খ্যাত শন কনেরি আর একই অঙ্গে হাজার রুপের জাঁদরেল অভিনেতা ডেনিয়েল ডে লুইস!
৪) দ্য সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বসে হ্যানিবল চরিত্রটি সবসময় সাদা রঙের জামা পড়েছে কেন জানেন? এটা এন্থনি হপকিন্সের আইডিয়া। তার মতে, মানুষের মধ্যে চিকিৎসকের চেম্বারে যাওয়ার যে ভয়, সাদা এপ্রোনের যে একটি আতংক আছে সেটি এই সিনেমায় সবচেয়ে বেশি দরকার!
৫) চলচ্চিত্রটির পোস্টার মোশন পিকচার ইতিহাসের অন্যতম আইকনিক একটি ইমেজ। খেয়াল করলে দেখবেন যে পোস্টারে মথের উপর একটি কংকাল রয়েছে। এটি সালভার দালির একটি ছবি “In Voluptas Mors” থেকে অনুপ্রাণিত একটি পোস্টার।
৬) হ্যানিবল লেকটারের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে সত্যিকারের খুনিদের উপর গবেষণা করেছেন এন্থনি হপকিন্স, পরিদর্শন করেছেন জেলখানা আর দেখা করেছেন দন্ডপ্রাপ্ত খুনিদের সাথেও। এমনকি আদালতের শুনানিতেও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন অপরাধীদের মনস্তত্ব বোঝার জন্য যে, কেন একটি মানুষ আরেকজন মানুষ কে খুন করার মতো ভয়াবহ কাজ করতে পারে। অন্যদিকে, জুডি ফস্টারও একজন সত্যিকারের FBI এজেন্টের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ক্ল্যারিস স্টার্লিং চরিত্রটি নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য।

৭) হ্যানিবলের মতো বিখ্যাত না হলেও জুডি ফস্টার অভিনীত ক্ল্যারিস স্টার্লিং চরিত্র দারুণ প্রশংসিত হয়েছিলো। সিনেমার অন্যতম একটি আলাপ ছিলো এইরকম যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পুরুষ-শাসিত একটি প্রতিষ্ঠান। সিনেমায় নারী হয়েও জুডি ফস্টারের বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে সহকর্মীদের সমীহ অর্জন করার ব্যাপারটি পছন্দ হয় FBI-এর। নারীদের কে এই সংস্থায় আরো বেশি নিয়োগের উদ্দেশ্যে FBI যুক্ত হয়ে যায় সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস টিমের সাথে!
৮) সিনেমার বাফেলো বিল, ক্ল্যারিস যেই অপরাধীর উপর তদন্ত করছিলো, চরিত্রটি বাস্তব তিনজন সিরিয়াল কিলারের উপর নির্ভর করে নির্মিত।
৯) ১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিটের সিনেমায় মাত্র ১৬ মিনিট অভিনয় করে এন্থনি হপকিন্স অস্কার জিতে নেন!

১০) স্ট্যানলি কুব্রিকের “2001: A Space Odyssey” (1968) এর সুপার কম্পিউটার HAL এর কথা মনে আছে? হ্যানিবল লেকটার চরিত্রের অশুভ দিক ফুটিয়ে তুলতে এই HAL এর কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে এন্থনি হপকিন্স!