মানিব্যাগে তিনশো রূপি নিয়ে ব্যাঙ্গালোরে আসা এক 'প্যান ইন্ডিয়ান সুপারস্টার' এর গল্প!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
বাসচালক বাবার ইচ্ছে ছিলো, ছেলে সরকারী চাকরি করবে। কিন্তু ছেলের ইচ্ছে, সে হবে সুপারস্টার। অগত্যা, মতের অমিল। কলহ। পরিবারের সাথে অভিমান করে, পকেটে মাত্র তিনশো রূপি নিয়ে উঠে বসা ব্যাঙ্গালোরের বাসে। ইয়াশ কি জানতেন, পরিবারের বিপরীতে গিয়ে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত থেকেই একদিন তিনি পরিণত হবেন প্যান ইন্ডিয়ান সুপারস্টারে? ইয়াশ কি জানতেন, একদিন গোটা উপমহাদেশ তাকে চিনবে একনামে?
History Tells us, the powerful people come from powerful places. History was wrong. Powerful people make places powerful.
সিনেমার সাথে যদি জীবনের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে চমকটা বেশ জবরদস্ত হয়। যেটা হয়েছিলো 'কেজিএফ' এর ক্ষেত্রে। সবারই জানা, উপরের এই যে দুটি লাইন, তা লেখা হয়েছিলো 'কেজিএফ' এর প্রোটাগনিস্ট 'রকি ভাই' এর জন্যে। কিন্তু অনেকেরই যা জানা নেই, এই 'রকি' চরিত্রের আড়ালে থাকা সুপারস্টার ইয়াশ এর ক্ষেত্রেও খুব দারুণভাবে খাপ খেয়ে যায় লাইন দুটি। তারকাদের যে প্রবল ঝিকিমিকি দ্যুতিতে আমাদের চোখ ঝলসে যায় নিয়মিত, খুব গভীরে যে তাদেরও আছে কিছু সাধারণ গল্প, ইয়াশের জীবন-সংগ্রাম মূলত সেদিকেই ইঙ্গিত করে। বোঝায়-
শক্তিশালী মানুষই কোনো একটি স্থানকে শক্তিশালী করে।
যাকে একনজর দেখার জন্যে পাগলের মত হামলে পড়ে ভক্তরা, যার সিনেমা মুক্তির দিনে কর্ণাটকের নানা গ্রাম থেকে উৎসবের উৎসাহে ট্রাকভর্তি দর্শকেরা চলে আসে সিনেমাহলে, যে মানুষটি 'কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি'র 'সুপারস্টার' থেকে তিলে তিলে রূপান্তরিত হয়েছেন 'প্যান ইন্ডিয়ান সুপারস্টার' এ, সেই ইয়াশের শুরুর গল্পটা যদি কেউ শোনেন, তাহলে মনে পড়বে 'ফরেস্ট গাম্প' সিনেমার বিখ্যাত সেই লাইনটিই-
Life is like a box of chocolates, you never know what you’re going to get.
ইয়াশ, বা, যার পরিবারপ্রদত্ত নাম নাভিন কুমার গৌড়, তার বেড়ে ওঠা কর্ণাটকের মাইসোরের প্রত্যন্ত জনপদে। বাবা 'বিএমটিসি'র বাস ড্রাইভার। মা গৃহিনী। পরিবার যে বেশ কায়ক্লেশের, তা বলাই বাহুল্য। টানাপোড়েনের সংসার। নুন আনতে ফুরিয়ে যাচ্ছে পান্তা। এভাবেই দিনানিপাত। ঘামেশ্রমে ঘরকন্না, সাথে একটামাত্র আশা, ছেলে বড় হবে, সরকারি চাকরি করবে। পরিবারের হাল ধরবে। সুদিন ফিরবে। সেজন্যেই আয়োজন। 'সবেধন নীলমণি'কে মানুষ করার জন্যে উঠেপড়ে লাগা।
কিন্তু এদিকে তখন অন্য বিড়ম্বনা। যে 'প্রদীপের সলতে'কে নিয়ে এত আশা, সেই নাভিনের মোটেও ইচ্ছে নেই চাকরি-বাকরির। ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছে, সে হিরো হবে৷ বাহারি শার্টের কলার উঠিয়ে, কপালে ফেট্টি আর চোখে সানগ্লাসের সুপারস্টার হবে। ছোট বাচ্চাদের 'বড় হয়ে কি হতে চাও' প্রশ্ন করলে অনেকেই অনেকরকম উত্তর দেয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সবার ইচ্ছেও পালটায়। কিন্তু ছোট্ট নাভিনের ছোটবেলা থেকেই একটাই উত্তর, সে নায়ক-ই হবে। অভিনয় করবে। আর কোনো অপশন নেই। আর কোনো অপশন নিয়ে সে চিন্তিতও না। হোক স্কুলের বার্ষিক নাটক কিংবা পাড়ার কারো বিয়ে... অভিনয় অথবা নাচানাচি কিংবা 'নায়ক' এর কারিশমা দেখানোর সামান্যতম সুযোগ পেলেও, সেখানে পাওয়া যাবে তাকে। 'নায়ক' হওয়া নিয়ে এই যে খ্যাপাটেপনা, এই যে দৌরাত্ম্য, এসবের ফলশ্রুতিতে তার নামই একসময়ে হয়ে যায় 'হিরো।' 'হিরো' নামেই সবাই চেনে তাকে।
বাবা-মা ভেবেছিলেন, ছেলে বড় হবার সাথে সাথে হয়তো এই পাগলামি কেটে যাবে। কিন্তু ছেলে যতই বড় হতে থাকলো, জগদ্দল পাথরের মত ততই চেপে বসতে থাকলো অভিনয়ের সিন্দাবাদের ভূত। 'নায়ক' হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ ছেলেকে বাবা-মা নানাভাবে বোঝালেন। অভিনয়-জগতের অনিশ্চয়তা নিয়ে ভয় দেখালেন। শাপশাপান্তও করলেন। কিন্তু কোনোভাবেই কোনো লাভ হলোনা। নাভিন নিজের সিদ্ধান্তে রইলেন অটল। এক সকালে চূড়ান্ত বিতণ্ডা হলো। নাভিন ঘর ছাড়লেন। পরিবারও সাফ জানিয়ে দিলো-
যদি অভিনয় করে সফল হতে পারো তো, ভালো কথা। নাহলে ফিরে আসবে বাড়িতে। আমরা যা বলবো, সেটাই করবে। আর অভিনয়ের নামও আনবে না মুখে।
পকেটে তিনশো রূপি আর কাঁধে একটা ব্যাগ নিয়ে ব্যাঙ্গালোরে এলেন নাভিন। প্রথমবারের মত এই শহরের মুখোমুখি হয়ে টনক নড়লো তার। বিশাল শহর। অজস্র মানুষ। টগবগে জনস্রোত। সবাই ব্যস্ত। কেউ কারো দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না। কেমন যেন যান্ত্রিক। এরকম প্রচণ্ড যান্ত্রিক শহরে কিভাবে কি করবে সে? নাকি ফিরে যাবে বাড়িতে? মাথায় নানা ভাবনা। দুশ্চিন্তা। তবে সেসব স্থায়ী হলোনা। শহরে থাকারই সিদ্ধান্ত নিলো সে। কারণ- বাড়ি ফিরলে অভিনয়ের সাথে জন্মের মত আড়ি। অগত্যা, দাঁতে দাঁত চাপা। জনস্রোতে ঝাঁপ। সংগ্রামের দিনলিপি।
অল্পদিনের মধ্যেই স্থানীয় এক থিয়েটারে কাজ জুটে গেলো নাভিনের। ততদিনে অবশ্য নিজের নাম পাল্টে ইয়াশ করে ফেলেছে সে। থিয়েটারের সবাই তাকে 'ইয়াশ' নামেই চেনে। ছোটখাটো কাজ, চা আনা থেকে চণ্ডীপাঠ, ব্যাকস্টেজ আর্টিস্ট, কোনো আর্টিস্টের অবর্তমানে ইমার্জেন্সি আর্টিস্ট... নানারকম কাজ জুটতে লাগলো ইয়াশের। অবশ্য কাজ যেরকমই হোক, ইয়াশ তাতে পুরোপুরিই রাজি। থিয়েটারের সাথে থাকলে দুই বেলা খাবারদাবার ফ্রি পাওয়া যাচ্ছে। রাতে ঘুমানোর জায়গা পাওয়া যাচ্ছে। থিয়েটার গ্রুপের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে পারা যাচ্ছে। এ তো সোনায় সোহাগা। পকেটে যার তিনশো রূপির জোর, তার জন্যে এর চেয়ে মণিকাঞ্চনযোগ আর হতেও বা পারে কি?
থিয়েটারের সাথে থাকার সুবাদে সবার অভিনয় খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হতো ইয়াশের। অভিনয়ের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয়গুলো এভাবেই শেখা ইয়াশের। যদিও 'অভিনেতা' হিসেবে স্টেজে দাঁড়ানোর মাহেন্দ্রক্ষণ তখনও আসেনি তার জীবনে। তবে খুব তাড়াতাড়িই এলো সে ক্ষণ। কিভাবে? সেটাই বলছি। থিয়েটারের সাথে একবার সে গেলো মুম্বাই। মুম্বাইয়ের বিখ্যাত এক থিয়েটারে মঞ্চস্থ হচ্ছিলো তাদের নাটক। নাটক চলাকালে শুরু হলো ক্রাইসিস। একজন আর্টিস্ট কোনো কারণে তখনও আসতে পারেননি। অথচ তার দৃশ্যও চলে এসেছে প্রায়। কী করা যায়? ইয়াশ সাহস করে বললো, সে প্রক্সি দিতে পারবে মঞ্চে। ইমার্জেন্সি আর্টিস্ট হিসেবে। নাটকের ডিরেক্টর প্রথমে রাজি হলেন না। কিন্তু পরে বাধ্য হয়েই যেতে দিলেন ইয়াশকে। কারণ, নাটকের বিশেষ দৃশ্যের সে অভিনেতা তখনও অনুপস্থিত। 'শো' এরও দেরী হয়ে যাচ্ছিলো। অগত্যা, গ্রিন সিগন্যাল। ধীর পায়ে ইয়াশের প্রথমবার মঞ্চে দাঁড়ানো। সামনের গ্যালারিতে কালো কালো অগুণতি মাথা। মাথার উপরে ভারী আলো। মঞ্চের শীতল মেঝে।
কী ভাবছেন? খুব আহামরি অভিনয় করেছিলো ইয়াশ? মোটেও না। দুই-তিন লাইনের একটা সাদামাটা সংলাপ ছিলো তার। সেটিই মোটামুটি ভালোভাবে পারফর্ম করে বেরিয়ে এলো সে। যদিও রানটাইম আহামরি না, কিন্তু এটুকুর সুবাদেই ইয়াশ ইতিবাচক সুনাম পেলো। থিয়েটারের বেশ কিছু নাটকে অভিনয়েরও সুযোগ এলো এরপর। এবং এরকম অভিনয় করতে করতেই এক টিভি সিরিয়াল ডিরেক্টরের চোখে পড়লেন তিনি। সেই পরিচালক তার নাটকে ইয়াশকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন।
যদিও ইয়াশের ইচ্ছে ছিলো, থিয়েটারে অভিনয় শিখে সরাসরি সিনেমাই করবেন তিনি। নাটকে অভিনয় করার ইচ্ছে ছিলোনা মোটেও। কিন্তু নাটকের টাকা ভালো, তাছাড়া নাটক যেহেতু অনেকদিন ধরে হয়, ক্যামেরার সামনে অভিনয়েও মোটামুটি সিদ্ধহস্ত হওয়া যাবে.... এরকম চিন্তাভাবনা থেকেই ইয়াশ নাটকে এলেন। 'নন্দ গোকুল' নামের এক সিরিয়ালে অভিনয় করলেন। সে সিরিয়াল বেশ জনপ্রিয়ও হলো। মোটামুটি সংস্থান হলো অর্থের। পরিবারকে ব্যাঙ্গালোর নিয়ে এলেন। সিরিয়ালের কাজ চলছে, এরইমধ্যে 'মোগিনা মানাসুফল' নামের এক সিনেমায় অভিনয়েরও সুযোগ এলো। সে সিনেমায় চার নায়ক ও চার নায়িকা থাকা সত্বেও আলাদা নজর কাড়লেন ইয়াশ। নায়কের মত ঠাটবাট তো ছোটবেলা থেকেই আছে। সিনেমায় সেটা আরো ঝকমকে অবয়বে প্রকাশিত হলো। ফলাফল- আলাদাভাবে সবার নজরে আসা। নিজের অভিষেক সিনেমাতেই ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জেতা!
তবে এই সিনেমার সুবাদে অ্যাওয়ার্ড কিংবা জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তিনি জিতলেন আরেকটি বিশেষ পুরস্কার। এ সিনেমারই এক নায়িকার মন জিতলেন তিনি। নায়িকা রাধিকা পণ্ডিতের সাথে সম্পর্ক জোড়া লাগলো সিনেমার সেটেই। যদিও এর আগেই দুজন একসাথে একটা সিরিয়ালে অভিনয়ও করেছেন৷ বন্ধুত্ব তখন থেকেই শুরু। সিনেমার সেটে এসে সে বন্ধুত্ব গড়ালো প্রণয়ে। পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেমের পরে সে প্রণয় গড়ালো পরিণয়ে। যে পরিণয়ের পরিণতি হিসেবে ফুটফুটে এক সন্তানও আছে তাদের।
ইয়াশ ঘরে যেমন দায়িত্বশীল সন্তান, বাবা, স্বামী, তেমনি বাইরেও তিনি দায়িত্বশীল অভিনেতা। তিনি জানেন, ভক্তদের জন্যেই এতদূর আসা তার, তিনি জানেন অভিনয়কে ভালোবেসেছেন বলেই জীবনে এতকিছু পেয়েছেন তিনি। এবং ঠিক সে কারণেই, অভিনয়ে তিনি বরাবরই একাগ্রনিষ্ঠ। এবং সেজন্যেই, ভক্তদের ভালোবাসাকে তিনি বরাবরই সম্মান করেছেন 'দায়িত্ব' হিসেবে। যে দায়িত্বের ফলাফল হিসেবে- গুগলি, মিস্টার অ্যাণ্ড মিসেস রামাচারি কিংবা মাস্টারপিস... সিনেমা যেমনই হোক, প্রত্যেক সিনেমাতে তার কর্তব্যজ্ঞান বরাবরই মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
অভিনয় তো যত্ন-গুরুত্ব-কর্তব্য নিয়ে করেনই, পাশাপাশি আরেকটি কাজ ইয়াশ খুব গুরুত্ব দিয়ে করতেন। নতুন পরিচালকদের কাজ আগ্রহ নিয়ে দেখা। এভাবেই একদিন ঘটনাচক্রে নতুন এক পরিচালকের সিনেমা 'উগ্রাম' দেখলেন ইয়াশ। দেখেই পরিচালকের কাজ ভালো লেগে যায় তার। আলাদাভাবে তিনি পরিচালককে জানানও তার ভালো লাগার কথা। এ ঘটনা এখানেই শেষ হলেও পারতো। কিন্তু ঘটনা শেষ হলোনা। এই যে নবীন পরিচালক, যিনি 'উগ্রাম' বানিয়েছেন, তার মাথায় তখন অন্য এক সিনেমার পোকা। বড় ক্যানভাস, বিশাল বাজেটের এক সিনেমা বানানোর নীলনকশা নিয়ে তিনি তখন তড়পাচ্ছেন। প্রসঙ্গত জানাই, কন্নড় ইন্ডাস্ট্রিতে সাধারণত ২০-৩০ কোটি রূপির উপরে সিনেমা বানায় খুব কম পরিচালক। সেখানে এই পরিচালক চাচ্ছেন এমন এক সিনেমা বানাতে, যে সিনেমার বাজেট ৬০-৭০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে অনায়াসেই। এবং এই সিনেমায় তিনি চাইলেন ইয়াশকেও। সে চাওয়ার অংশ হিসেবেই ইয়াশকে গল্পের সামান্য অংশ শোনালেন পরিচালক। ইয়াশ সেটুকু শুনেই রাজি হয়ে গেলেন তৎক্ষনাৎ। এবং নিজেই বললেন, সিনেমার নাম হবে-
কেজিএফ।
এভাবেই নবীন নির্মাতা প্রশান্ত নীল ও ইয়াশ নামলেন ব্যাটিং এ। দুইজনের পার্টনারশিপ এতটাই খোলতাই হলো, কন্নড় সিনেমার ইতিহাসই পালটে গেলো চিরতরে। খুব অনগ্রসর এক ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা নাম লেখালো 'প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমা'র সম্মানজনক বিলবোর্ডে। রূপকথার মতই পরপর ঘটে গেলো সব।
'কেজিএফ' এর সুবাদে বৈশ্বিক সে সাফল্য পেলেন ইয়াশ, এরকম সাফল্য পেলে যেকোনো তারকারই প্রবল উচ্ছ্বসিত হওয়ার কথা। কিন্তু ইয়াশের যেকোনো সাক্ষাৎকার কিংবা প্রমোশনাল ক্যাম্পেইন খেয়াল করলে দেখা যাবে, এসব সাফল্য খুব বেশি উচ্ছ্বসিত কিংবা বিন্দুমাত্রও বিচলিত করে না তাকে। তিনি নিজেই বলেন-
ছোটবেলা থেকে বহুকিছুর সাথে লড়াই করতে করতে একটা জিনিসই শিখেছি, এই যে সাকসেস, এটা খুব সাময়িক একটা জিনিস৷ এবং এরকম সাময়িক এক জিনিস নিয়ে খুশি হবো, আত্মতুষ্টি হবে... এগুলোর কোনো মানেই নেই।
ইয়াশ যেদিন বাড়ি থেকে জামাকাপড়ের একটা ব্যাগ আর পকেটে তিনশো রূপি নিয়ে উঠে বসেছিলেন ব্যাঙ্গালোরের বাসে, তিনি হয়তো জানতেন না, তিনি কতদিন পরিশ্রম করবেন। তবে তিনি এটা জানতেন, সফল তিনি হবেনই। সেই আত্মবিশ্বাস কোনোদিনই কমেনি তার। যখন থিয়েটারে সারাদিন উদয়াস্ত খেটে দিনশেষে পঞ্চাশ রূপির ছেঁড়া একটা নোট পেতেন, সেদিনও তিনি বিশ্বাস করতেন, এই শহরই একদিন দু'হাত ভরে ফিরিয়ে দেবে তাকে। দিয়েছেও। হারুকি মুরাকামি যেমন বলেছিলেন- যদি আপনি বিশ্বাস করেন আপনি একটা কাজে ভালো, তাহলে সে কাজের জন্যে যদি আপনি ব্যর্থও হন, তবু আপনি বিজয়ী। ঠিক সেটাই সত্য হয় ভক্তদের 'রকিং স্টার', 'আন্তামা' কিংবা 'রাজাহৌলি' ইয়াশের ক্ষেত্রে। যিনি বিশ্বাস করতেন তিনি পারবেন, যার ভক্তরাও বিশ্বাস করতো- তিনি পারবেন। এবং, তিনি পেরেছেনও। পাশাপাশি পেরেছেন এও বোঝাতে- দিনশেষে বিশ্বাসটাই আসল। এবং বিশ্বাস যদি সাথে থাকে, তাহলে বাকিসব প্রতিবন্ধকতা স্রেফ মূল্যহীন। সেসব একবাক্যে নাকচ করলেও চলে।